| |
               

মূল পাতা সারাদেশ জেলা ‘মেলান্দহ পিআইও‘র অনিয়মই নিয়মে পরিণত;  শ্রমিকবিহীন ইজিপিপি প্রকল্পের বেহাল অবস্থা’


কর্মদিবসে শ্রমিক শুন্য মেলানন্দহ চরবানিপাকুড়িয়া ইউনিয়নের প্রকল্প

‘মেলান্দহ পিআইও‘র অনিয়মই নিয়মে পরিণত;  শ্রমিকবিহীন ইজিপিপি প্রকল্পের বেহাল অবস্থা’


ওসমান হারুনী     16 December, 2022     03:41 PM    


জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা-পিআইও মুহাম্মদ আ. রাজ্জাকের দায়িত্বহীনতার কারণে প্রকল্প ও উপকার ভোগী নির্বাচনে নিয়মাবলী স্বচ্ছতাভাবে অনুস্বরণ না করায় সরকারের কোটি কোটি টাকা লুটপাটের পায়তারা ও প্রকল্পে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। 

জানা যায়, গত ২৬নভেম্বর/২০২২ইং থেকে মেলান্দহ উপজেলায় ২০২২-২০২৩ইং অর্থ বছরের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি-ইজিপিপির ওয়েজ প্রকল্পের ১১টি ইউনিয়নে ৬০টি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ৪০০টাকা দৈনিক হাজিরায় শ্রমিকরা ৪০দিন পর্যন্ত প্রকল্প গুলোতে কাজ করবে। কিন্তু প্রকল্প গুলির কাজে বাস্তব চিত্র ভিন্ন। শ্রমিক বিহীন প্রকল্পের দায়সারা কাজ করে প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা লুটপাটের জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আ:রাজ্জাকের অনিয়ম নিয়মে পরিণত হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, ভিআইপি, চেয়ারম্যানম্যান ও ইউপি সদস্যদের আত্বীয় স্বজন, স্বচ্ছল শ্রমিক দিয়ে উপকার ভোগী ও নেতিবাচক তালিকা হওয়ায় মেলান্দহ উপজেলায় গত ২৬নভেম্বর থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও প্রকল্পের কাজে নেই কোন শ্রমিক। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার  মুহাম্মদ আ:রাজ্জাকের যোগশাজসে প্রকল্পে টাকা লুটপাটের জন্য অনেক প্রকল্প কাজ শুরুর আগেই শ্রমিকের বদলে গাড়ি ও ভেকুপ দিয়ে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা দায়সারা কাজ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।  আবার কোন কোন প্রকল্পের চলছে তালিকা ভক্ত শ্রমিক ছাড়াই চুক্তিভিত্তি কয়েকজন শ্রমিক ও  টলি গাড়ি দিয়ে কাজ।  অনেক প্রকল্পের কাজে জণগণের চলাচল ও জীবন যাত্রা বাধাঁগ্রস্ত করে বেহাল করে রেখেছে প্রকল্প সভাপতিরা। ইজিপিপি প্রকল্পের এমন বেহাল অবস্থাচিত্র দেখার কেউ নেই।

জানা গেছে, ইজিপিপি প্রকল্পে  বাস্তবায়নে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পিআইও, ফিল্ড সুপারভাইজার,ট্যাগ কর্মকর্তা এবং ইউনিয়ন কমিটি ওপিআইসি সদস্যগণ ইজিপিপি‘র আওতাধীন সামাজিক প্রকল্পের প্রাথমিক অবস্থা থেকে সমাপ্তি পর্যন্ত সকল স্তরে নিরবিচ্ছিন্ন ও নিরলসভাবে তাদের নিজ দায়িত্ব পালন করা কথা থাকলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। সরেজমিনে খোজঁ নিয়ে মেলান্দহ চলতি অর্থবছরের প্রথম পর্যায়ে ইজিপিপি প্রকল্প দেখা গেছে, কোন গৃহীত প্রকল্পই দৃষ্টিনন্দন ও দৃশ্যমান হচ্ছেনা। চলছে প্রকল্প বাস্তবায়নে হ-য-ব-র-র অবস্থা। কাজ শুরুর ১৬কর্মদিবস অতিবাহিত হলেও নেই কোন প্রকল্পের সাইনবোর্ড। প্রকল্প এলাকার লোকজন জানেন না কি প্রকল্পে মাধ্যমে কাজ করা হচ্ছে এলাকায়। অথচ্য ইজিপিপি‘র উপকারভোগী ও জণগণের অবগতির নিশ্চিত করার জন্য স্বচ্ছতার আলোকে এ কর্মসূচির কার্যক্রম জণগণের কাছে প্রকাশ করার কথা রয়েছে। নিদের্শনায় রয়েছে, অনুমোদিত প্রকল্প ও উপকার ভোগীদের তালিকা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে জনসাধারণের অবলোকনের ব্যবস্থা করা। প্রকল্প চলাকালে উপকারভোগীর হাজিরা খাতা দেখা, প্রকল্পের এলাকায় স্থাপিত ৬-১২ বর্গফুটের সাইন বোর্ড/বিল বোর্ডের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা। সাইন বোর্ড শক্ত কাঠ/স্টিলের ফ্রেমযুক্ত সি.আই,সীট দিয়ে তৈরী করে কালো সাদা রং দিয়ে লিখে শক্ত দুইটি কাঠ অথবা সিমেন্টের খুঁটিতে স্থাপন করা। কিন্ত বাস্তবে চিত্র ভিন্ন প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও  অদ্যাবধি মেলান্দহ উপজেলায় কোন ইউনিয়ন বোর্ড কার্যালয়ে টানানো পাওয়া যায়নি প্রকল্পের তালিকা,  উঠেনী প্রকল্প এলাকায় কাজের তথ্য সম্বলিত সাইনবোর্ড। প্রকল্পের এমন বেহাল অবস্থা যেন দেখার কেউ নেই। বুধবার ১৪ডিসেম্বর চরবানিপাকুরিয়া  ইউনিয়নে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্প নং-৩২নং  ভাবকী মিজান ডাক্তারের বাড়ী থেকে আলাল মেম্বারের বাড়ি হয়ে পাকা রাস্তা পর্যন্ত মেরামত প্রকল্পের ১৬কর্মদিবস অতিবাহিত হলেও এক টুপা মাটিও পড়েনি। এব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি সাফি আক্তার জানান,দুই এক দিনের মধ্যেই কাজ ধরা হবে।

৩৩নং প্রকল্পের  কোন অস্থিত নেই। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কর্মসৃজন প্রকল্পের তালিকায় ০৭ নং চরবানিপাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে(উত্তর পাশের্^)গর্ত ভরাট নামে ১১০ জন শ্রমিকের নামে ১৭লাখ ৬০হাজার টাকার যে প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। কর্ম দিবস চলাকালে গত ২৬নভেম্বর থেকে কোন শ্রমিকই সেখানে কাজ করেনি। বাজারের ঘর মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা গর্তভরাট করার জন্য ৩৩জন ব্যবসায়ী মিলে ৩৫হাজার  করে টাকা পরিষদে জমা দিয়ে মাটি কেটে ঘর তুলে নিয়েছে। কর্মসৃজন প্রকল্পের কথা তারা জানেন না। স্থানীয় সচেতন মহলরা জানান, ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা নিয়ে গর্তভরাট করে সেখানে ভূয়া কর্মসৃজন প্রকল্প দিয়ে পুকুর চুরি করার পায়তারা করছে চেয়ারম্যান-মেম্বাররা। এব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি আলাল উদ্দিন জানান,গত ২/৩ মাস আগেই সেখানে গাড়ি দিয়ে মাটি কেটে গর্তভরাট করে বাজার বসানো হয়েছে। পরে কর্মসৃজন প্রকল্প ডুকানো হয়েছে সেখানে।

৩৫ নং প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও কোন শ্রমিকে প্রকল্পের কাজে দেখেনী এলাকাবাসী। গাড়ি দিয়ে মাটি নিয়ে এসে  প্রকল্পের স্কুল মাঠে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থা এই  ইউনিয়নের ৩৬,৩৪ নং প্রকল্পের। কর্মদিবস চলাকালে কোন শ্রমিক কাজে আসেনি। গাড়ি দিয়ে মাটি এনে দায়সারা কাজ করে অতিদরিদ্র মানুষের নামে প্রকল্পের টাকা লোটপাটের পায়তারা করছে প্রকল্পের সভাপতিরা। কোন  প্রকল্পের জায়গায় উঠেনী সাইনবোর্ড। এছাড়াও ১৪ ডিসেম্বর শ্যামপুর ইউনিয়নের প্রকল্প নং-৫৬ কাজাইকাটা বটতলা হতে বারেক মেম্বারের বাড়ি পর্যন্তা মেরামত কাজে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৬কর্মদিবস অতিবাহিত হলেও এখনো কাজ শুরু করা হয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, ট্যাগ অফিসারদের কোন তদারকি না থাকায় এভাবেই কর্মদিবসে কর্ম ফাকিঁতে হ-য-ব-র-ল অবস্থায় চলছে মেলান্দহ উপজেলায় ইজিপিপি প্রকল্পের কাজ। এব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আ:রাজ্জাক জানান, প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে, কোন বিল দেওয়া হয়নি। কোন প্রকল্পের কাজে অনিয়ম হলে বিল দেওয়া হবে না বলে পাশ কাটিয়ে যান। 


এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: ময়মনসিংহ জামালপুর মেলান্দহ